আগ্রাসী শক্তি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে ভূমি, সমুদ্র ও আকাশে যুদ্ধমহড়া চালিয়েছে তাইওয়ান। স্বশাসিত তাইওয়ানের চীনের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যে এই মহড়া চলছে। উত্তেজনার পারদ চরমে উঠেছিল যখন চীনের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, তাইওয়ান যদি স্বাধীন হওয়ার চেষ্টা করে তাহলে প্রয়োজনে তারা শক্তি প্রদর্শন করবে। এই অবস্থার মধ্যে গতকালের এই মহড়ায় তাইওয়ান তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের অংশ হিসাবে এটা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেছেন, এই মহড়ার মাধ্যমে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় তারা যে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ তারই প্রমাণ বহন করে। আর সেই বাস্তবতাকে সামনে রেখেই তারা এগুচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র ও তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় তারা সবধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। এদিনের মহড়ায় তাইওয়ান এফ-১৬ ও নিজেদের বানানো চিংকুয়ো যুদ্ধবিমানও ব্যবহার করেছে। ছোট ছোট ঝোপঝাড়ের মধ্যে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা তাদের ট্যাংকগুলোর ছোড়া গোলা সমুদ্রতীরের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। মধ্য তাইওয়ানের তাইচুংয়ের নিকটবর্তী উপকূলীয় অঞ্চলে এই মহড়ায় প্রায় ৮ হাজার সৈন্য অংশ নিয়েছে। ‘হান কুয়াং’ নামের এ মহড়াটি তাইওয়ানের প্রধান বার্ষিক মহড়া। এর মাধ্যমে যুদ্ধ সক্ষমতায় অগ্রগতির মূল্যায়ন করা হয়। এছাড়া এটি দেশের ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষায় প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ বলেও গণ্য করা হয়। জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নিবাচিত হওয়া সাই চীনকে মোকাবিলার লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। গত বছর তাইওয়ান প্রতিরক্ষা খাতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দও দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা যুদ্ধসরঞ্জামে তাইওয়ানের সেনাবাহিনী সুসজ্জিত ও প্রশিক্ষিত হলেও চীনের বিপুলসংখ্যক সেনা ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের তুলনায় স্বশাসিত এ দ্বীপদেশটির রণপ্রস্তুতি ‘একেবারেই নগণ্য’। বেইজিং তার সশস্ত্র বাহিনীতে স্টিলথ যুদ্ধবিমান ও নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো অত্যাধুনিক নানান যুদ্ধাস্ত্রও সংযুক্ত করছে। তাইওয়ানের ওপর সামরিক, কূটনৈতিক নানা ধরনের চাপ বাড়ানোর পেছনে সাইকে অভিযুক্ত করছে চীন। স্বশাসিত দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট ‘আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার’ দিকে অগ্রসর হচ্ছেন বলেও মনে করছে তারা। অন্যদিকে সাই বলছেন, তাইওয়ান এখনি স্বাধীন দেশ, যার আনুষ্ঠানিক নাম ‘রিপাবলিক অব চায়না’।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা
Leave a Reply