পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পলাতক আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফেরাতে কাজ করছে পুলিশ। কীভাবে তাকে দেশে ফেরানো যায়-এ বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।এজন্য দেশের পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আরাভকে দুবাইয়ে গ্রেফতার করা হয়নি। এ অবস্থার মধ্যে দুবাইয়ে প্রকাশ্যে চলাফেরা এড়িয়ে চলছেন আরাভ। শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের পদ্মা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি বলেন, রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান দুবাইয়ে গ্রেফতার হয়েছেন এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে তাকে কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি হয়েছে। আমাদের সঙ্গে ইন্টারপোলের যোগাযোগ রয়েছে। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভারতের পাসপোর্টধারী হওয়ায় আরাভ খান ওরফে রবিউলকে ফেরাতে কিছু জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। এজন্য তারা ইন্টারপোলের পাশাপাশি কূটনৈতিক চ্যানেলকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ায় বহিঃসমর্পণ চুক্তি না থাকলেও দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সমঝোতার ভিত্তিতে অপরাধীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কূটনৈতিক প্রক্রিয়াতেই যদি আরাভের ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিল করা যায়, তাহলে তাকে ফেরানোও তুলনামূলক সহজ হবে। তবে দুবাইয়ে পলাতক কয়েক আসামিকে দেশে ফেরাতে না পারায় আরাভকে ফেরানোর বিষয়েও রয়েছে নানা শঙ্কা। এজন্য আরাভকে ফেরানোর পুরো বিষয়টিই নির্ভর করছে এ উদ্যোগে দুবাই ও ভারত কতটুকু সাড়া দেবে তার ওপর। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। এই হত্যাকাণ্ডের পর রবিউল ভারতে পালিয়ে যান। ২০২০ সালে রবিউল ভারতের পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। তার ভারতীয় পাসপোর্ট নং ইউ ৪৯৮৫৩৮৯। ওই বছরের ২৮ জুলাই কলকাতা থেকে ইস্যু করা পাসপোর্টে রবিউলের নাম আরাভ খান হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এই পাসপোর্ট দিয়েই তিনি দুবাইয়ে পাড়ি জমান। আয়ের কোনো দৃশ্যমান উৎস না থাকা সত্ত্বেও বড় পরিসরে শুরু করেন স্বর্ণ ব্যবসা। ১৫ মার্চ দুবাইয়ে তার মালিকানাধীন ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এই অনুষ্ঠানে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ দেশের অনেক তারকা অংশ নিয়েছিলেন। পরে জানা যায় আরাভ খুনের মামলার আসামি। পুলিশ পরিদর্শক খুনের পর রবিউল ওরফে আরাভ তার নামে একজনকে আত্মসমর্পণের জন্য ভাড়া করেছিলেন। ভাড়া করা ওই ব্যক্তি আত্মসমর্পণের পর ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। এই মামলায় ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ রবিউলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিউল এই মামলার চার্জশিটভুক্ত ৮নং আসামি। মামলাটি এখন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
Leave a Reply